চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের ৫টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বাইপাস ও ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্প প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। ২৫ কিলোমিটারে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বাইপাস নির্মাণে জাইকার সঙ্গে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ঋণ হিসেবে জাইকা দিচ্ছে ৫ হাজার কোটি টাকা। ভূমি অধিগ্রহণে ব্যয় হবে ৩ হাজার কোটি টাকা। অধিগ্রহণের এ টাকা আসবে সরকারি ফান্ড থেকে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এবং এই প্রকল্পের পরিচালক শ্যামল কুমার ভট্টাচার্য্য জানান, আগামী বছরের মাঝামাঝি শুরু হবে প্রকল্পের কাজ। এর মধ্যে প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষ হয়েছে। ডিপিপি একনেকে অনুমোদনের পর কনসালটেন্ট নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া ডিটেইল ডিজাইন তৈরীর পর ২০২৫ সালের মাঝামাঝিতে টেন্ডার আহ্বান করা হবে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে ২০২৫ সালে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, জাপানের বিশেষ অর্থায়নে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বাইপাস করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পয়েন্টগুলো হলো– পটিয়া বাইপাসকে আরো চওড়া (৬ লাইনে উন্নীত) করা, দোহাজারী বাজারে বাইপাস, সাতকানিয়ার কেরানীহাটে সাড়ে তিন কিলোমিটারের একটি ফ্লাইওভার নির্মাণ, লোহাগাড়ার আমিরাবাদ ও চকরিয়ায় বাইপাস নির্মাণ। এই পাঁচটি পয়েন্টে বাইপাস নির্মাণের ফলে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কে প্রতিদিনের দীর্ঘ যানজট, দুর্ভোগ ও দুর্ঘটনা কমে আসবে।
এই ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক শ্যামল কুমার ভট্টাচার্য্য আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কে পাঁচটি পয়েন্টে ২৫ কিলোমিটারে চারটি বাইপাস ও একটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করার লক্ষ্যে জাইকার সঙ্গে আমাদের ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর বাইরে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের অবশিষ্ট অংশ ১০৭ কিলোমিটার পর্যন্ত সড়কও জাইকার অর্থায়নে হবে। এই ব্যাপারে তাদের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। জাইকা প্রথম পর্যায়ে চট্টগ্রামের মইজ্জ্যারটেক থেকে চকরিয়া পর্যন্ত করতে চায়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ২০২৬ সালের আগে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কটি ছয় লেনে উন্নীত করাও হচ্ছে না। এই অবস্থায় গভীর সমুদ্রবন্দরের পণ্যবাহী গাড়ি এবং কক্সবাজারমুখী পর্যটকদের বিপুল গাড়ির চাপ সামাল দিতে এই মহাসড়কে চারটি বাইপাস এবং একটি ওভারপাস নির্মাণের সিদ্ধান্ত ছিল সরকারের। এ ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছিল জাপানি প্রতিষ্ঠান জাইকা। উদ্দেশ্য হচ্ছে, এ সব স্থানের যানজট এড়িয়ে নির্বিঘ্নে পণ্য পরিবহন নিশ্চিত করা।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এখন এই প্রকল্পের সড়কের ভূমি অধিগ্রহণ প্রস্তাব জেলা প্রশাসনে যাবে। এরপরই বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষ করে জমির ক্ষতিপূরণ পাবেন মালিকরা।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের বাইপাসগুলো হল– চকরিয়া, লোহাগাড়া, দোহাজারী ও পটিয়া। আর ওভারপাস বা ফ্লাইওভার হচ্ছে সাতকানিয়ার কেরানীহাটে। সেই বাইপাসগুলো নির্মাণের আগেই এই মহাসড়কে গুরুত্বপূর্ণ চারটি ছয় লেনের সেতু নির্মাণের কাজ শেষ করা হয়েছে।
পাঠকের মতামত